• শেরপুর শহীদিয়া আলিয়া (কামিল) মাদরাসা
  • শেরপুর শহীদিয়া আলিয়া (কামিল) মাদরাসা
  • শেরপুর শহীদিয়া আলিয়া (কামিল) মাদরাসা
  • শেরপুর শহীদিয়া আলিয়া কামিল মাদ্রাসা বগুড়া
  • শেরপুর শহীদিয়া আলিয়া কামিল মাদ্রাসা বগুড়া


প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে :


শেরপুর শহীদিয়া আলিয়া কামিল মাদ্রাসা বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী আলিয়া মাদ্রাসা।[১] মাদ্রাসাটি ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত একটি কামিল মাদ্রাসা। এটির দাখিল ও আলিম সেকশন বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে পরিচালিত হয়ে থাকে।[২] মাদ্রাসার বর্তমান অধ্যক্ষের নাম মো. হাফিজুর রহমান, তিনি ২০১৩ সাল থেকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন।[৩] ১৯৩৭ সালে তুরকান শাহের মাজারকে কেন্দ্র করে কিছু শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি কর্তৃক মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। মাদ্রাসাটি শেরপুর উপজেলা ও বগুড়া জেলায় ইসলামি শিক্ষা বিস্তারে অবদান রেখেছে।

ইতিহাস
১৯৩৭ সালে বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার কিছু ইসলামি শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের উদ্যোগে মাদ্রাসাটি ২২ বিঘার জমির উপরে প্রতিষ্ঠিত করা হয়।[৪] সেই সময় এটি মূলত তুরকান শাহের মাজারকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছিলো।[৫] সেই সময়ে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিলো যাতে শেরপুর উপজেলায় ইসলামি শিক্ষা বিস্তারে গতি লাভ করে। সেই সময় স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিরা মাদ্রাসার নামে প্রায় ৫২ একর সম্পত্তি দান করেছিলেন, এই জমির আয়ের টাকাতেই মাদ্রাসা পরিচালিত হতো।[৬] এটি শেরপুর উপজেলা ও বগুড়া জেলায় ইসলামি শিক্ষা প্রচারে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। ১৯৩৭ সালে প্রতিষ্ঠার পরে ৩ বছর পরেই মাদ্রাসাটি ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক অনুমোদন লাভ করে। এরপর মাদ্রাসা শিক্ষার্থী সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে ব্রিটিশ সরকার ও পাকিস্তান সরকার থেকে দাখিল ও আলিম শ্রেণী চালু অনুমতি পায়। এরপর মাদ্রাসাটিতে উন্নত ও উচ্চতর শিক্ষা প্রদানের জন্য ফাজিল শ্রেণী ও কামিল শ্রেণী চালু করা হয়।[৭]

এই মাদ্রাসার শিক্ষা ও অবকাঠামোর জন্য অধ্যক্ষ মাওলানা শামছুদ্দিনের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।[১] তিনি একটানা ৪৫ বছর (১৯৬১-২০০৩) মাদ্রাসার অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে মাদ্রাসার অনেক উন্নয়ন করেন।[৮] তার নামে ২০২১ সালে ৬ তলা একটি ভবনের ভিক্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়।[৯] ২০০৬ মাদ্রাসাটির ফাজিল ও কামিল ডিগ্রির মানের পরিবর্তনের জন্য কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়।[১০] এরফলে ফাজিল ও কামিল পরীক্ষা উভয় মিলিয়ে সাধারণ শিক্ষার পূর্ণ স্নাতক ডিগ্রির সমমান লাভ করে। এরপরে ২০১৬ সালে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হলে মাদ্রাসাটি সেখানে স্থানান্তরিত করা হয়।[১১]

শিক্ষা কার্যক্রম
এই মাদ্রাসায় আলিয়া মাদ্রাসার সূচনা ইবতেদায়ী সেকশন থেকে সর্বোচ্চ শ্রেণী কামিল সেকশন পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। মাদ্রাসার ফাজিল ও কামিল শ্রেণীতে বিটিআইএস (ইঞওঝ), বিএ (ইঅ) ও বিএসএস (ইঝঝ) ডিগ্রি প্রদান করা হয়। মাদ্রাসায় আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি ভাষা নাকে তিনটি বিভাগ চালু রয়েছে।

হেফজ মাদ্রাসা
এই মাদ্রাসার অধীনে একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসা পরিচালিত হয়। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি সহিহভাবে কুরআন তেলাওয়াত শিক্ষার জন্য এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ২০২০ সালে এক প্রবাসীর অর্থায়নে হেফজ মাদ্রাসার আবাসিক হোস্টেল নির্মাণ করা হয়েছে।[১২]

সুযোগ-সুবিধা
মাদ্রাসাটি বগুড়া শহরের শেরপুর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত, শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে এই মাদ্রাসায়।

বিজ্ঞানাগারঃ মাদ্রাসায় একটি আধুনিক বিজ্ঞানাগার রয়েছে, মাদ্রাসার অধ্যক্ষের সাহায্যে বিজ্ঞানাগারটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অনন্য প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহন করে থাকে। এই বিজ্ঞানাগারে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞানের নানা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রয়েছে।
পাঠাগারঃ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য মাদ্রাসাটিতে একটি বৃহৎ পাঠাগার রয়েছে। এই পাঠাগার থেকে শিক্ষার্থীরা বই সংগ্রহ করে পড়তে পারে, আবার নিদিষ্ট সময় পরে বই ফেরত দিতে হয়। এই পাঠাগার থেকেই ফাজিল ও কামিল শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বিতরণ বা বই ধার দেওয়া হয়।